কক্সবাজার, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

উখিয়ায় অপহৃত রোহিঙ্গা শিশু উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহৃত মো. রায়হান নামে ৪ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণ চক্রের প্রধান সাদেকসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছে।

 

উদ্ধার মো. রায়হান ক্যাম্প-১৬ এ/১ ব্লকের আবু জাফরের ছেলে।

 

 

 

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মরক্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় প্রযুক্তির সহযোগিতায় ও ড্রোন ব্যবহার করে অভিযানের সফলতা পেয়েছেন।

 

 

 

গ্রেপ্তাররা হল, টেকনাফের মোচনী রেজিস্টার্ড ক্যাম্প-২৬ এর সি ব্লকের মো. আমিনের ছেলে সাদেক হোসাইন (২৫), তার বোন রোকসানা (১৫) এবং একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে আমির ফয়সাল (২৩)। তাদের মধ্যে অপহরণ চক্রের মূল হোতা সাদেক হোসেন জামতলি বাজার সংলগ্ন জহুর আলমের বাসায় ভাড়া থাকত।

 

 

 

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় উখিয়া থানা চত্বরে উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মো. রাসেল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিশু অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও অভিযান পরবর্তী আটকের বর্ণনা দেন।

 

 

 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত ৩০ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে ১৬ নম্বর ক্যাম্প থেকে শিশু রায়হানকে ২০ টাকার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করে সাদেক ও ফয়সাল। শিশুটিকে টেকনাফ থানাধীন মুচনী রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের পেছনে দুর্গম পাহাড়ে আটকে রাখে। সেখানে তার ওপর অমানবিক অত্যাচার-নির্যাতন করে শিশুর মা বাবাকে কান্নার শব্দ মোবাইলে শুনিয়ে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে, শিশুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা।

 

 

 

এমতাবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভুক্তভোগীর মা রেহেনা বেগম। এরপর তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জড়িতদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে উখিয়া থানার চৌকস আভিযানিক দল দুর্গম পাহাড়ের ঢালে বিভিন্ন ঝুপড়ি ঘরে শিশুটির সন্ধানে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং দিনের বেলা ড্রোনের মাধ্যমে পাহাড়ের উপর থেকে অনুসন্ধান করা হয় দুর্বৃত্তদের অবস্থান।

 

 

 

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে সাড়াশি অভিযান চালিয়ে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সাদেককে জামতলী থেকে গ্রেপ্তার এবং তার দেখানো মতে মুচনী ক্যাম্পের সি ব্লক থেকে অপহরণ চক্রের আরেক সদস্য তার বোন রোকসানার কাছ থেকে অপহৃত শিশু রায়হানকে উদ্ধার করা হয়।

 

 

 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, রায়হানের বাবা-মা তাদের ছেলেকে উদ্ধার করতে রোহিঙ্গাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অপহরণ চক্রকে মুক্তিপণ দেওয়ার জন্য ৪৫ হাজার ৭০০ টাকা মুক্তিপণ জোগাড় করে। কিন্তু এই টাকায় অপহরণ চক্রের সদস্যরা রায়হানকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়নি।

 

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক একটি রোহিঙ্গা অপহরনকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদশি ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকজনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে যাচ্ছে। স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও শত চেষ্টার পরও তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না।

পাঠকের মতামত: